Translate

এক্সপির ইতিহাস গড়া সেই ছবিটি!!!

সময়টা ১৯৯৮ সালের জানুয়ারি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্থানীয় অধিবাসীদের প্রায় সবাই জানেন সে সময়টায় যখন তখন আকাশে মেঘ জমত। কয়েক মাস পরে গ্রীষ্ম শুরু হলে পথঘাট বাদামি রং ধারণ করার আগে বৃষ্টি-বাদলায় পাহাড়গুলোতে দেখা যাবে সবুজের সমারোহ। আলোকচিত্রী চার্লস ও’রিয়ার গাড়ি চালিয়ে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সনোমা থেকে মেরিন যাচ্ছিলেন বান্ধবী (বর্তমানে তাঁর স্ত্রী) ডাফনির কাছে। পথে পড়ল হাইওয়ে-১২। এই এলাকার পথঘাট কিছুটা সংকীর্ণ, তবে প্রচুর বাতাস। জায়গাটায় এসে চার্লস দেখলেন, নিচে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া পাহাড়ি ঢালে আকাশে জমে থাকা কিছু দমকা মেঘের আলো-ছায়া সবুজ ঘাসগুলোকে আরও ঝলমলে সবুজ করে তুলেছে। গাড়ি থামিয়ে নিজের মাঝারি মানের মামিয়া আরজেড-সিক্সসেভেন ফিল্ম ক্যামেরা দিয়ে দৃশ্যটি ফ্রেমবন্দী করে আবার ছুটলেন তাঁর গন্তব্যে। পরে ইন্টারনেটে করবিস স্টক ফটো লাইব্রেরিতে ছবিটা দিয়ে দিলেন চার্লস। কাকতালীয়ভাবে করবিসের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্বয়ং বিল গেটস। সেখান থেকেই ব্লিসজ নামের ছবিটির খোঁজ পায় মাইক্রোসফট। ২০০১ সালে বাজারে আসা সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এক্সপির নিজস্ব ওয়ালপেপারে ব্যবহার করা হয় ছবিটি। তারপর বাকিটা তো ইতিহাস। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের চোখে সবচেয়ে বেশি বার দেখা ছবিটিই হলো এই ব্লিস।


ব্লিসজ: বিখ্যাত সেই ছবিটি
ব্লিসজ: বিখ্যাত সেই ছবিটি

সেই জায়গার বর্তমান ছবি
সেই জায়গার বর্তমান ছবি

যে ছবিটি সরাসরি ক্যামেরা থেকে বেরিয়েছে, সেটা নিয়ে রয়েছে আরও মজার ঘটনা। মাইক্রোসফটের নিজস্ব প্রকৌশলীদের একটা দল এটাকে ফটোশপের কারসাজি বলে ধরে নেয়। ২০০০ সালের মধ্যভাগে এক ই-মেইল বার্তায় চার্লসকে এ কথাটা জানানোও হয়। চার্লস জবাব দেন, ‘তোমাদের সবার ধারণা ভুল। সত্যিকার একটা কাজ, আমি যেখানে বাস করি জায়গাটা তার কাছেই এবং যেমনটা দেখছ ঠিক তেমনটাই। ছবিটাতে কোনো কারুকাজ করা হয়নি।’ সামান্য একটু কাটছাঁট আর ঘাসের উজ্জ্বলতা কিছুটা বাড়ানো ছাড়া মাইক্রোসফট নিজেও ছবিটাতে কোনো হাত দেয়নি।
৮ এপ্রিল মাইক্রোসফট হালনাগাদ বন্ধ করে দিলেও এখনো ইন্টারনেটে যুক্ত বিশ্বের ২৫ শতাংশ কম্পিউটারে চলছে উইন্ডোজ এক্সপি। ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া অবস্থায় চলছে আরও অসংখ্য এক্সপিচালিত কম্পিউটার। বৈধ লাইসেন্স ছাড়া সবচেয়ে বেশি এক্সপি চলছে খোদ এশিয়াতেই। উইন্ডোজ এক্সপির পথচলা তাই অব্যাহতই আছে, সেই সঙ্গে এখনো বেঁচে আছে ইতিহাস গড়া সেই ব্লিসজ ছবিটিও। গুগল ম্যাপে ছবিটির বর্তমান অবস্থান দেখা যাবে goo.gl/rdVWYU ওয়েব ঠিকানায়।  (লিখেছেন মঈন চৌধুরী, প্রথম আলো, পিসিওয়ার্ল্ড ও এক্সট্রিমটেক অবলম্বনে)
Share on Google Plus

About Unknown

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় পাঠক, আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখক কে ভালো কিছু লেখার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ যোগায় তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত/মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।পোস্টটি পড়ার পর আপনার ভাল-লাগা,মন্দ-লাগা,জিজ্ঞাসা কিংবা পরামর্শ প্রদানের জন্য দয়া করে গঠনমূলক মন্তব্য প্রদান করবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।আপনার একটি মন্তব্যই আমার নিকট অনেক মূল্যবান।আসসালামু আলাইকুম...