Translate

উইন্ডোজ ৭ এ নেটওয়ার্ক কনফিগারেশন করুন (ফুল টিউটোরিয়াল)

windows7network
অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের মতো উইন্ডোজ ৭-এ বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ফাংশন রয়েছে, যা যথাযথ কনফিগারেশনের মাধ্যমে সক্রিয় করাসহ তা নেটওয়ার্ক অপারেশনের কাজে লাগানো যায়। এ ধরনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাডভান্সড কনফিগারেশন নিয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে :
আইপি কনফিগারেশন
আইপি (ইন্টারনেট প্রটোকল) অ্যাড্রেসের মাধ্যমে একটি কমপিউটারকে নেটওয়ার্কে পরিচিত করা হয়। এ অ্যাড্রেস দিয়ে নেটওয়ার্কের অন্যান্য কমপিউটার তাকে খুঁজে বের করবে। অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের মতোই উইন্ডোজ ৭-এ আইপি কনফিগারেশন বেশ সহজ।
আইপি কনফিগারেশনের জন্য প্রথমে আপনাকে কমপিউটারের কন্ট্রোল প্যানেল (Control Panel) থেকে Network and Sharing Center-এ অ্যাক্সেস করতে হবে। এ ছাড়া সিস্টেম ট্রের নেটওয়ার্ক আইকন থেকেও এটি অ্যাক্সেস করা সম্ভব। তবে এ জন্য নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস প্রথমে সক্রিয় করতে হবে। নেটওয়ার্ক আইকনে ডান ক্লিক করলেই পপআপ মেনুতে Open the Network and Sharing Center অপশনটি পাওয়া যাবে (চিত্র-১)।
আপনি নেটওয়ার্ক অ্যান্ড শেয়ারিং সেন্টার উইন্ডোর ওপরের বাম কোনায় অ্যাডাপ্টার সেটিংস অপশনটি পাবেন। উল্লেখ্য, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার নামেও পরিচিত (চিত্র-২)।
RPS_certificates ওয়্যারড এবং ওয়্যারলেস দুই ধরনের নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস নেটওয়ার্ক কানেকশনস উইন্ডোতে পাবেন। স্ট্যাটিক আইপি অ্যাড্রেস কনফিগার করার জন্য নেটওয়ার্ক কানেকশনস উইন্ডোতে যেকোনো একটি ওয়্যারড বা ওয়্যারলেস অ্যাডাপ্টার বা ইন্টারফেস সিলেক্ট করতে পারেন (চিত্র-৩)।
ইন্টারফেসটিতে ডান ক্লিক করলে একটি পপআপ বা সাব-মেনু সামনে আসবে এবং এ মেনু থেকে প্রোপার্টিজ অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।
এবার প্রপার্টিজ অপশন সিলেক্ট করা মাত্রই ইন্টারফেস প্রোপার্টিজ উইন্ডোজ সামনে আসবে। এখানে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক প্যারামিটার এন্ট্রি দিতে পারেন (চিত্র-৪)।
আইপি কনফিগারেশনের জন্য প্রোপার্টিজ উইন্ডোর Networking ট্যাব প্রথমে সিলেক্ট করে এরপর TCP/IPv4 অপশনটি বেছে নিতে হবে। এবার IPv4 প্রোপার্টিজ স্ক্রিনে স্ট্যাটিক আইপি বা ডিএনএস অ্যাড্রেস সেট করতে পারেন। এখানে একটি নেটওয়ার্ক ইন্টারফেসের জন্য একাধিক আইপি অ্যাড্রেস কনফিগার করা যেতে পারে। ডিএনএস (ডোমেনইন নেম সার্ভিস) সার্ভার স্ট্যাটিকভাবে কনফিগার করেও নেটওয়ার্ক থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইপি অ্যাড্রেস কমপিউটার পাবে। এভাবেও কমপিউটারকে কনফিগার করা যাবে। কিন্তু আইপি অ্যাড্রেস স্ট্যাটিক অবস্থায় সেট করে ডিএনএস সার্ভার ডায়নামিকভাবে কনফিগার করা যাবে না।
নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ডের স্ট্যাটিক আইপি অ্যাড্রেস পরিবর্তন করার জন্য Use the following IP address অপশনটি অবশ্যই সিলেক্ট করতে হবে। এরপর নির্ধারিত স্থানে আইপি অ্যাড্রেস এন্ট্রি দিতে সক্ষম হবেন। উদাহরণস্বরূপ, এখানে আইপি অ্যাড্রেস 192.168.1.100, সাবনেট মাস্ক 255.255.255.0 এবং ডিফল্ট গেটওয়ে 192.168.1.1. এন্ট্রি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া একই উইন্ডো থেকে ডিএনএস সার্ভারের অ্যাড্রেস এন্ট্রি দিতে পারেন। এ উদাহরণে ডিএনএস সার্ভারের অ্যাড্রেস হিসেবে 4.2.2.2. এন্ট্রি দেয়া হয়েছে। এ উদাহরণে ব্যবহার হওয়া এন্ট্রিগুলো চিত্র-৫-এ দেখানো হলো।
স্ট্যাটিক আইপি অ্যাড্রেস কনফিগারেশন এই কমপিউটারের জন্য কার্যকর করতে Ok বাটনে ক্লিক করুন।
উইন্ডোজ ৭-এ অ্যাডভান্সড IPv4 কনফিগারেশন
উইন্ডোজ ৭-এ অ্যাডভান্সড IPv4 সেটিংয়ের জন্য প্রোপার্টিজ উইন্ডোর Advanced বাটনে ক্লিক করুন (চিত্র-৫)। এ সেটিং উইন্ডোতে কনফিগারেশনের জন্য তিনটি ভিন্ন ট্যাব পাবেন (চিত্র-৬)। এগুলো হচ্ছে :
আইপি সেটিং
ডিএনএস সেটিং
উইনস সেটিং
ক. আইপি (IP) সেটিং
এ ট্যাবে একটি নেটওয়ার্ক ইন্টারফেসের জন্য একাধিক আইপি অ্যাড্রেস যোগ করতে পারেন। এ ধরনের সেটিং আপনাকে তখনই করতে হবে যখন এক আইপি নেটওয়ার্ক থেকে অন্য আইপি নেটওয়ার্কে একটি আইপি অ্যাড্রেসের ট্রানজিশন বা অবস্থানগত পরিবর্তন ঘটে। ফলে কমপিউটারটি উভয় নেটওয়ার্কে একই সাথে যোগাযোগ সাধন করতে পারে। এ ছাড়া নেটওয়ার্ক ইন্টারফেসকে মাল্টিপল ডিফল্ট গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এ ধরনের কনফিগারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি নেটওয়ার্কে ডিফল্ট গেটওয়ের অ্যাড্রেস যথাযথভাবে নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
কানেকটিভিটির জন্য একের অধিক সংখ্যক ইন্টারফেস ব্যবহার করা হলে শুধু তখনই metric option কনফিগার করা হয়। কোনো কারণে উচ্চ প্রায়োরিটিসম্পন্ন ইন্টারফেসটি অকার্যকর হয়ে গেলে তখন কম মানের মেট্রিকসম্পন্ন ইন্টারফেসটি সংযোগের জন্য প্রায়োরিটি পাবে। আইপি অ্যাড্রেস, গেটওয়ে এবং মেট্রিক সেটিংয়ের ধাপগুলো চিত্র-৬-এ দেখানো হলো।
খ. ডিএনএস (DNS) সেটিং
প্রোপার্টিজ উইন্ডোর দ্বিতীয় ট্যাব হচ্ছে DNS কনফিগার করার জন্য। এখানে আপনি ডিএনএস সার্ভার রেকর্ড যোগ করতে পারেন এবং প্রয়োজনে তা এডিট বা মুছে ফেলতে পারেন। এ ছাড়া ডিএনএস ট্যাবে DNS suffixes কনফিগার করতে সক্ষম হবেন। DNS lookups বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ডিএনএস সাফিক্স ব্যবহার করা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যদি test.here.com সার্ভারে অ্যাক্সেস করতে চান, তাহলে এ ক্ষেত্রে here.com-কে ডিএনসি সাফিক্স হিসেবে সেট করতে হবে। এ ওয়েবসাইটে অ্যাক্সেস করার ক্ষেত্রে উইন্ডোজ প্রথমে নিজ থেকে test খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে, কোনো কারণে ব্যর্থ হলে উইন্ডোজ তখন here.com এর সাথে test যোগ করে test.here.com’ খুঁজতে থাকবে। এ কনফিগারেশন পদ্ধতি চিত্র ৭-এ দেখানো হলো।
গ. উইনস (WINS) সেটিং
প্রোপার্টিজ উইন্ডোর তৃতীয় এবং সর্বশেষ ট্যাবটি হচ্ছে WINS। নেটওয়ার্কভুক্ত কমপিউটারের NetBIOS নেম (এটি উইন্ডোজ নেম হিসেবেও পরিচিত) রেজ্যুলেশন সম্পর্কিত প্যারামিটার সেট করার ক্ষেত্রে এটি কনফিগার করতে হবে। বাইডিফল্ট নেটবায়োস নেম ব্রডকাস্ট মেকানিজমের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে তার উপস্থিতি জানায়। নেটওয়ার্কে উইনস সার্ভার সেটআপ করা থাকলে নেটবায়োস নামসম্পন্ন কোনো কমপিউটার খুঁজে বের করার জন্য সার্ভারে প্রথমে অনুসন্ধান চালানো হবে।
এ ট্যাবের দ্বিতীয় অপশনটি হচ্ছে নেটবায়োস সেটিং। টিসিটি/আইপি অ্যাড্রেসের পরিবর্তে নেটওয়ার্কে কোনো কমপিউটার খোঁজার জন্য নেটবায়োস ব্যবহার করা হবে কি না তা এখানে নির্দিষ্ট করে দেয়া যায়। নেটওয়ার্কে কোনো কমপিউটার যদি আইপি অ্যাড্রেসের পরিবর্তে তার নেটবায়োস বা উইন্ডোজ নেম দিয়ে পরিচিত হতে চায়, তাহলে Enable NetBIOS over TCP/IP অপশনটি ক্লিক করে সক্রিয় করতে হবে। এ সেটিং অপশনটি চিত্র-৮-এ দেখানো হলো।
নেটওয়ার্কে একটি কমপিউটার সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য তার আইপি অ্যাড্রেসসহ ডিএনএস এবং উইনস কনফিগারেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ অপশনগুলোর মধ্যে কোনটি আপনি ব্যবহার করতে চান সেটি নির্ভর করছে নেটওয়ার্কের ধরন এবং ব্যাপ্তির ওপর। নেটওয়ার্কে কোনো কমপিউটার বা তার শেয়ারভুক্ত রিসোর্স অ্যাক্সেসে কোনো সমস্যা হলে আইপিসহ এসব সেটিং পরিবর্তন বা এডিটিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং নেটওয়ার্ক ট্রাবলশুটিংয়ের জন্য উক্ত কনফিগারেশন গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা আবশ্যক।

Share on Google Plus

About Unknown

    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় পাঠক, আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখক কে ভালো কিছু লেখার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ যোগায় তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত/মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।পোস্টটি পড়ার পর আপনার ভাল-লাগা,মন্দ-লাগা,জিজ্ঞাসা কিংবা পরামর্শ প্রদানের জন্য দয়া করে গঠনমূলক মন্তব্য প্রদান করবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।আপনার একটি মন্তব্যই আমার নিকট অনেক মূল্যবান।আসসালামু আলাইকুম...